peoplepill id: tarun-sanyal
TS
5 views today
5 views this week
The basics

Quick Facts

Gender
Male
Family
The details (from wikipedia)

Biography

তরুণ সান্যাল( ২৯ অক্টোবর ১৯৩২– ২৮ আগস্ট২০১৭) ছিলেন ঊনিশ শতকের শেষার্ধের বাংলার বিশিষ্ট বাঙালি কবি ও সম্পাদক।তার সাম্যবাদী চেতনার ও সংবেদনশীল মননের লেখনী যুক্ত হয়বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রবীন্দ্র পুরস্কার ওবাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায় সম্মানিত হয়েছেন তিনি।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন

তরুণ সান্যালের জন্ম ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ২৯ অক্টোবরব্রিটিশ ভারতের অধুনাবাংলাদেশের তৎকালীন পাবনা জেলার (পরবর্তীতে সিরাজগঞ্জ জেলার) পোরজনা গ্রামে। তিনি অশ্বিনীকুমার সান্যাল ও হিরন্ময়ী দেবীর কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন। তার পিতাকে বর্ধমান রাজের দেওয়ানী সংক্রান্ত কাজের দেখাশোনার কারণে বিভিন্ন স্থানে থাকতে হয়েছে। আর সেকারণে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে পাবনা-রাজশাহী, বর্ধমান ও বাঁকুড়ায়। বিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে যখন নাৎসি জার্মানি সোভিয়েত ইউনিয়নকে আক্রমণ করে, আর ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলার মন্বন্তরে যে বেদনাদায়ক পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই সময় থেকেই তিনি কমিউনিস্টদের সান্নিধ্য পেতে লাগলেন। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পাশের পরই কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য পদ লাভ করলেন। বর্ধমান রাজ কলেজে ভর্তি হয়ে ছাত্র ফেডারেশনের নেতা হলেন। ফলতঃ কারাগারে বন্দী হন, ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে অনশন, পডাশোনা বন্ধ একবছর। শেষে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে পাশ করেন আইএসসি এবং বর্ধমান ছেড়ে কলকাতায় আসেন। অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনার জন্য ভর্তি হন কলকাতারস্কটিশ চার্চ কলেজে। এখানে তার শিক্ষক ছিলেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অম্লান দত্ত। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দেস্নাতকহন এবং ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি নিয়ে এম.এ পাশ করেন।

কর্মজীবন

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম.এ পাশের পর তিনি ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে বালুরঘাট কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। কিন্তু কমিউনিস্ট যোগ থাকার কারণে কর্মচ্যুত হতে হয়। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি কলকাতারস্কটিশ চার্চ কলেজে অর্থনীতি অধ্যাপক পদে যোগ দেন এবং ৬২ বৎসর বয়সে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন|

সাহিত্যকর্ম

তরুণ সান্যালের ছিল সংবেদনশীল ও মানবিক মন। সাম্যময় উজ্জ্বল সমাজ গড়ার আকাঙ্খা আর বামপন্থী চেতনায় ভর করেছেন এগিয়েছেন। কবিতা রচনায় ছিল প্রকৃতি আর তার তেমন মনের প্রকাশ। আবেগময় স্পষ্ট এবং বলিষ্ঠ ভাষা, অনর্গল ও মসৃণ ছন্দপ্রবাহে সৃষ্টি করেছেন কবিতা। কমিউনিস্ট হওয়ার কারণে, সাম্যবাদী চেতনায় অনুসারী ছিলেন বিষ্ণু দে, সমর সেন, সুভাষ মুখোপাধ্যায় প্রমুখের। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে বারো বৎসর বয়সেই প্রথম কবিতা লেখেন, অবশ্য প্রকাশিত হয় ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে। বাংলা আধুনিক কবিতা বিষয়ে চিন্তাশীল প্রবন্ধও রচনা করেছেন। তরুণ সান্যালের প্রথম কাব্যগ্রন্থ মাটির বেহালা প্রকাশিত হয় ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ হতে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা বারোটি। একুশটি কাব্যনাট্য নিয়ে পাঁচটি কাব্যনাট্য গ্রন্থ, সাতটি প্রবন্ধগ্রন্থ এবং তিনটি কবিতার অনুবাদগ্রন্থ।

রচনাসম্ভার

  • মাটির বেহালা (১৯৫৬)
  • অন্ধকার উদ্যানে যে নদী, (১৯৬২)
  • রণক্ষেত্রে দীর্ঘবেলা একা, (১৯৬৮)
  • তোমার জন্যই বাংলাদেশ (১৯৬৮)
প্রবন্ধগ্রন্থ-
  • রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রোত্তর কাব্য বীক্ষণ
  • রেনেসাঁস আমাদের ও তাহাদের

তিনিরমেশচন্দ্র দত্তের দ্য ইকোনমিক হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া অনুবাদ করেছেন।


তরুণ সান্যাল কবিতা রচনার পাশাপাশি কমিউনিস্ট পার্টির কাজ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে করতেন। ছাত্র-রাজনীতি, সাহিত্য-সংস্কৃতি আন্দোলন সবেতেই যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টির বিভাজন হলে তিনি সিপিআই দলেই থেকে যান। ভারত-সোভিয়েত সংস্কৃতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও, কলকাতা থেকে প্রকাশিত দলের মুখপত্র সাহিত্য পত্রিকা পরিচয়-এর সম্পাদকও ছিলেন তিনি। তবে তিনি নিজের অভিমত ও চিন্তাধারার গুরুত্ব দিতেন বেশি। সেকারণেই ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে তিনি নিজেকে দল থেকে বিচ্ছিন্ন করে নেন।

সাম্যময় উজ্জ্বল সমাজ গড়ার আকাঙ্খায় আর বামপন্থী চেতনায় ভর করে এগিয়েছেন, প্রতিবাদ করেছেন পথে নেমে বিভিন্ন সময়ে। সঙ্গ দিয়েছেন মহাশ্বেতা দেবী প্রমুখ বুদ্ধিজীবী ব্যক্তিত্বের কৃষক আন্দোলনে, নির্যাতিত, নিপীড়ত আর অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে। গড়েও তুলেছিলেন শিল্পী সাংস্কৃতিক কর্মী বুদ্ধিজীবী মঞ্চ।


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান

১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তরুণ সান্যালের সংবেদনশীল ও মানবিক মন মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে জনমত গঠনে জাগ্রত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ তাকে অনুপ্রাণিত করে। তার কমিউনিস্ট পার্টি কলকাতার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে সভার আয়োজন করলে তিনি সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান আর নিজে কলম ধরেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। যখন যেভাবে পেরেছেন ছুটে গেছেন বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে। স্কটিশ চার্চ কলেজের অধ্যাপক ও ওগেলভি হস্টেল সুপার হওয়ার সুবাদে, তিনি আশ্রয় দেন বহু বাংলাদেশের ছাত্র ও বুদ্ধিজীবী মানুষদের। নিজের বাড়িতে রাখেন সাহিত্যিক শওকত ওসমানকে। মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র জোগানে সহায়তা করেন। এসব কাজের জন্য তিনি বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া ছাড়াও, স্ত্রীর অলঙ্কার পর্যন্তও বন্ধক দিয়েছিলেন।


সম্মাননা

সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কবি তরুণ সান্যালকে রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জনমত গঠনের জন্য বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননায় সম্মানিত হয়েছেন।

জীবনাবসান

কবি তরুণ সান্যাল ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের ২৮ আগস্ট কলকাতার বিধাননগরের এক বেসরকারি নার্সিংহোম শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বৎসর। তার স্ত্রী হলেন কেয়া সান্যাল, কন্যা শতরূপা সান্যাল হলেন একজনভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পরিচালক। তাঁদের অপর দুই সন্তান বিশ্বরূপ সান্যাল ও মহাশ্বেতা সান্যাল।

তথ্যসূত্র

The contents of this page are sourced from Wikipedia article. The contents are available under the CC BY-SA 4.0 license.
Lists
Tarun Sanyal is in following lists
comments so far.
Comments
From our partners
Sponsored
Credits
References and sources
Tarun Sanyal
arrow-left arrow-right instagram whatsapp myspace quora soundcloud spotify tumblr vk website youtube pandora tunein iheart itunes