Swami Pragyananda
Quick Facts
Biography
স্বামী প্রজ্ঞানন্দ পূর্ব নাম দেবব্রত বসু(১৮৮১―এপ্রিল,১৯১৮), ছিলেনভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক অগ্নিযুগের বিপ্লবী। বিংশ শতকের সূচনায় যে সমস্ত ধর্মীয় নেতা বিপ্লবকর্মে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনিতাঁদের অন্যতম।
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
দেবব্রত বসুর জন্ম অবিভক্ত বাংলার অধুনা বাংলাদেশের রংপুর জেলার সৈয়দপুরে। পৈতৃক নিবাস ছিল অধুনা পশ্চিমবঙ্গেরহুগলি জেলার হরিপাল থানার খেজুর গ্রামে। প্রকৃত নাম ছিল দেবব্রত বসু। স্নাতক হওয়ার পর তিনি কিছুদিন "সন্ধ্যা" পত্রিকার সম্পাদকের কাজ করেন। এরপর তিনি যুগান্তর বিপ্লবী দলের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হন এবং শ্রীঅরবিন্দের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। দলের মুখপত্র যুগান্তর এর লেখক ছিলেন। মানিকতলা বোমা মামলা,আলিপুর বোমা মামলা সংক্রান্ত বিষয়েরাজসাক্ষী নরেন গোঁসাই এর স্বীকারোক্তির ফলে দেবব্রত ধরা পড়েন। বিপ্লবী নেতা কিরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়কলকাতায় দেবব্রত বসুর কাছেই প্রথম বাস করেন।
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ও শচীন্দ্রনাথ সেন (পরবর্তীতে স্বামী চিন্ময়ানন্দ) রামকৃষ্ণ মঠে আশ্রয় লাভ করেন সারদা মায়ের অনুমোদনে এবং রাজনীতি ছেড়ে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। নাম হয় স্বামী প্রজ্ঞানন্দ। তিনি সারদা মায়ের অত্যন্ত প্রিয় শিষ্যদের একজন ছিলেন। তার ভগিনী সুধীরাদেবীও ছিলেন সারদা মায়ের বিশেষ স্নেহধন্যা ও মন্ত্রশিষ্যা।তিনি নারীশিক্ষা বিস্তারেভগিনী নিবেদিতার বিদ্যালয়ের শিক্ষয়িত্রী ও সহযোগী ছিলেন এবং বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে তার যোগ ছিল। ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি তার অগ্রজ দেবব্রত বসুর সাথে বিপ্লববাদ প্রচারে কটক ও পুরী সফর করেছিলেন। ১৮১২ খ্রিস্টাব্দের ১৩ ই ডিসেম্বর বড়লাট লর্ড হার্ডিঞ্জ বিরাট শোভাযাত্রা করে যখন সস্ত্রীক রাজধানীতে প্রবেশ করছিলেন তখন বিপ্লবী নায়করাসবিহারী বসুর নির্দেশে তরুণ বসন্তকুমার বিশ্বাস তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়েন। প্রাণে বেঁচে গেলেও বড়লাট সাংঘাতিক ভাবে আহত হন। শ্রীমা তখন কাশীতে ― সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন বিপ্লবী দেবব্রত বসু। পূর্বের বোমা মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে পুলিশ দেবব্রত বসুরও অনুসন্ধান করছে। উপস্থিত সন্ন্যাসীরা তাঁকে অন্যত্র সরে যেতে বললে, নির্ভীক সারদা মা বললেন ―
"কী হয়েছে? ও তো এখন কিছু করে না। এরা সব ভয় পাচ্ছে কেন?"
আগ্রা ও অওধের যুক্ত প্রদেশ বর্তমানেরউত্তর প্রদেশের মায়াবতীতে অবস্থান কালে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি থেকে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের মে পর্যন্ত তিনি প্রবুদ্ধ ভারত পত্রিকার সম্পাদনা করেন। কিছুদিন উদ্বোধন পত্রিকারও সম্পাদনা করেন। তার রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থটি হল ― ভারতের সাধনা
জীবনবসান
১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে দেহত্যাগ করেন স্বামী প্রজ্ঞানন্দ। মা সেদিন অঝোরে কেঁদেছিলেন ― তিনি মায়ের দৃষ্টিতে ছিলেন 'যোগিপুরুষ'।