Sagarlal Dutta
Quick Facts
Biography
সাগরলাল দত্ত বা 'সাগর দত্ত' (১৮২১ — ১৮৮৬) একজন জনহিতৈষী বাঙালি ব্যবসায়ী, সমাজসেবী ও দানবীর ছিলেন। তার নামাঙ্কিত কামারহাটীতে কলেজ অফ মেডিসিন এবং সাগর দত্ত হাসপাতাল তারই দান করা জমিতে অবস্থিত।
অবদান
সাগর দত্ত ১৮২১ সালে হুগলি জেলার চুঁচুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন সুবর্ণবণিক সম্প্রদায়ের দত্ত পরিবারে। পিতার নাম ছিল মোহনচাঁদ দত্ত। ১৭ বছর বয়েসে পৈতৃক ব্যবসার দেখাশোনার কাজ ছেড়ে 'কার্লাইল নেফিউ অ্যান্ড কোম্পানি' নামক একটি বিদেশী কোম্পানীর অফিসে কেরাণী তথা মুৎসুদ্দির কাজ করতে থাকেন তিনি। কিছুকাল পরে দত্ত লাভজনক নীলের কারবারে যোগ দেন। বিপুল পয়সা অর্জন করার দুই বছর পরে দাদা পীতাম্বর দত্তের সাথে পাটের ব্যবসায় নামেন এবং সাগরলালবাবু নামে খ্যাতি পান। যদিও তিনি দেশীয় সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত ছিলেন। ব্রাহ্মসমাজের উন্নতিতে অর্থ প্রদান করেন। নিজের এলাকায় ঠাকুরবাড়ী, অতিথিশালা, ইংরেজি শিক্ষা বিদ্যালয় ইত্যাদি স্থাপন করেন। দানশীল ব্যক্তি হিসাবে তার বিশেষ পরিচিতি হয়। কলকাতার কলুটোলায় থাকাকালীন তিনিই প্রথম বাঙালী ব্যক্তি যিনি টেলিফোন ব্যবহার করেছিলেন। তার স্ত্রী ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে হাসপাতাল তৈরীর প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন সাগর দত্ত। ১৮৮৬ সালে তার মৃত্যুর আগে ১৩ লক্ষাধিক টাকার সম্পত্তি ও কামারহাটি বাগানবাড়ীর জমি দান করে যান এই উদ্দেশ্যে। হুগলি জেলার দত্তবাড়ীর দুর্গাপূজার প্রচলন করেন সাগর দত্ত। কলকাতা পুরসভা, ১৯২৮ সালে শোভারাম বসাক ফার্স্ট লেনের নাম পরিবর্তন করে সাগর দত্ত লেন করে। সম্পর্কে তিনি সঙ্গীতশিল্পী লালচাঁদ বড়ালের মাতামহ।
পারিবারিক জীবন
সাগরলাল ব্যবসার কারণে কলকাতার কলুটোলার ১৪ নং গোপালচন্দ্র লেনের বাড়িতে বাস করতেন। চুঁচুড়ারবাড়িতেই থাকতেন তার স্ত্রী জহরমণি দেবী। তাদের ছিল দুটি কন্যা সন্তান। কনিষ্ঠা কন্যা ছিলেন খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পীলালচাঁদ বড়ালের মাতা। পুত্র সন্তান না থাকায় সাগরলাল বৃদ্ধ বয়সে মানিকলালকে পোষ্যপুত্র গ্রহণ করেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে মানিকলালের অনুরাগ ছিল না। মানিকলালকে পোষ্যপুত্র হিসাবে গ্রহণ করার পরই স্ত্রী জহরমণি দেবী ম্যালেরিয়ায় মারা যান। পত্নী বিয়োগের পর সাগরলাল সংসারের উপরবীতরাগ হয়ে কামারহাটির বাগানবাড়ীতে বসবাস করতে থাকেন। ১২৯৩ বঙ্গাব্দের ২৫ কার্তিক বুধবার ( নভেম্বর ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে) পরলোক গমন করেন।