Jyotish Chandra Joardar
Quick Facts
Biography
জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদার বা 'জ্যোতিরিন্দ্র জোয়ারদার' (২০ এপ্রিল, ১৯০৫ ― ২২ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৩) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বিপ্লবী, যিনিসুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ অনুগামী,ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্যতম কর্ণধার ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী
জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদারের জন্ম ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২০ এপ্রিলব্রিটিশ ভারতের অধুনাবাংলাদেশের ময়মনসিংহে। অত্যন্ত মেধাবী ও কৃতি ছাত্র ছিলেন তিনি। আইএসসি পাশের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পদার্থ বিজ্ঞানেসাম্মানিকসহবিএসসি ওএমএসসি পাশ করেন। তিনিবিশ্ববিশ্রুত বিজ্ঞানী অধ্যাপকসত্যেন্দ্রনাথ বসুর অত্যন্ত প্রিয় ছাত্র ছিলেন। তবে ছাত্রাবস্থাতেই বিপ্লবীহেমচন্দ্র ঘোষের সংস্পর্শে এসেবেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সে যোগ দেন। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে মেজর সত্য গুপ্তের মাধ্যমে সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৯ আগস্ট লোম্যান হত্যার ঘটনায় প্রথম কারারুদ্ধ হন। কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং-এ,(বর্তমানে বিবাদী বাগে অবস্থিত মহাকরণ) অলিন্দ যুদ্ধের পরিকল্পনাকারীনিকুঞ্জ সেনের সহযোগী ছিলেন। সুভাষচন্দ্রের একনিষ্ঠ অনুরাগী তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের অন্যতম কর্ণধার ছিলেন। সুভাষের মহানিষ্ক্রমণের সময়ও তিনি কারাবন্দী হন। এভাবে বিভিন্ন সময়ে নানা অভিযান ও আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি চৌদ্দ বৎসর কারাবাস করেন।
সুভাষচন্দ্রের ভাবাদর্শে সামনে রেখে তিনি পরবর্তীতে কর্মপ্রবাহ জারি রাখেন নিশান পত্রিকা প্রকাশ ও 'সুভাষ সংস্কৃতি পরিষদ' গঠনের মাধ্যমে। সুভাষ সংস্কৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা,পরামর্শদাতা ও সংগঠক ছিলেন তিনি। তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, বিজ্ঞানীমন ও দৃষ্টিকোণে সুভাষচন্দ্রকে ব্যাখ্যা করেছেন নানা রচনায়। অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ না করে দেশবাসীকে দাসত্ব ও বন্ধনদশা থেকে মুক্ত করে পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জনের আর মানুষের মর্যাদা প্রদানের কথা ব্যক্ত করতেন। জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদার তার রচনা সমগ্রে সুভাষচন্দ্রের মূল কথাগুলিকে বিশ্লেষণ করে পূর্ণ স্বাধীনতা ও মানুষের মর্যাদা রক্ষায় চারটি স্তম্ভের কথা উল্লেখ করেছেন। সেগুলি ছিল -
- রাজনৈতিক মুক্তি
- অর্থনৈতিক মুক্তি
- বিবেক মুক্তি
- মানুষের প্রতি মর্যাদা
অর্থাৎ এই চারটি স্তম্ভ রক্ষিত হলে সুভাষবাদেই সর্বকালের সর্বমানবের জীবনের লক্ষ্য ও অধিকার অর্জন সম্ভব।
১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের জ্যোতিষচন্দ্র প্রথম পশ্চিমবঙ্গ বিধান সভার সদস্য নির্বাচিত হন। বিগত দিনের নানা কারণে তার শ্রবণ শক্তির সমস্যা হয়েছিল এবং শেষের দিকে তিনি সম্পূর্ণ বধির হয়ে যান। অকৃতদার অগ্নিযুগের বিপ্লবী জ্যোতিষচন্দ্র জোয়ারদার ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় প্রয়াত হন।