Athara Ali
Quick Facts
Biography
আতাহার আলী (জন্ম: অজানা ) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে।
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
আতাহার আলী খানের জন্ম মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বারাইভিকরা গ্রামে। তার বাবার নাম আলাদত খান এবং মায়ের নাম তোতা বেগম। তার স্ত্রীর নাম শিরিয়া বেগম। তাঁদের তিন মেয়ে ও এক ছেলে।
কর্মজীবন
আতাহার আলী চাকরি করতেন ইপিআরে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন দিনাজপুর ইপিআর সেক্টরের অধীন ১০ নম্বর উইংয়ে (বর্তমান ব্যাটালিয়ন)। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে যুদ্ধ করেন ৬ নম্বর সেক্টরের সাহেবগঞ্জ সাবসেক্টরে। তিস্তা, পাটেশ্বরী, জয়মনিরহাট, রায়গঞ্জ ও ভূরুঙ্গামারীসহ আরও কয়েক স্থানে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে, নভেম্বরের শেষের দিকে কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলা সদরের উত্তর দিকে রায়গঞ্জ এলাকায় দুধকুমার নদের পশ্চিম পাশে ছিলো সীমান্ত এলাকা। সেখানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শক্ত প্রতিরক্ষা অবস্থান। সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে যেতে থাকলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাম্প লক্ষ্য করে। তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত। একটি দলে আছেন আতাহার আলী। আক্রমণের নির্দিষ্ট সময় ছিলো শেষ রাত। আর কিছু সময়ের মধ্যেই তারা পৌঁছে যাবেন নির্ধারিত স্থানে। অন্য দলগুলোরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজ নিজ নির্ধারিত স্থানে পৌঁছার কথা। তারপর তারা একযোগে আক্রমণ শুরু করবেন। আতাহার আলী ও তার সহযোদ্ধারা তাঁদের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে প্রতিরক্ষা অবস্থান নিচ্ছেন। এমন সময় তাঁদের ডান দিকে হঠাৎ শুরু হয়ে গেল গোলাগুলি। শব্দে গোটা এলাকা প্রকম্পিত।
ডান দিকে রাতের আকাশ লাল বর্ণ ধারণ করল। নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু হয়ে গেল তুমুল যুদ্ধ। পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আক্রমণ করেছে। আতাহার আলী ও তার সহযোদ্ধারা পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকলেন। যুদ্ধ চলতে থাকল। মুক্তিযোদ্ধারা একটু একটু করে এগিয়ে যেতে থাকলেন সামনে। একসময় তারা পাকিস্তানিদের প্রবল প্রতিরোধ উপেক্ষা করে পৌঁছে গেলেন পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পের কাছে। আতাহার আলী ও তার সহযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তানিদের আক্রমণ মোকাবিলা করতে থাকলেন। সারা দিন যুদ্ধ চলল। রাতেও থেমে থেমে গোলাগুলি চলল। পরদিন সকাল হওয়ার আগেই পাকিস্তানি ক্যাম্প থেকে গুলির শব্দ নীরব হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর জানা গেল, পাকিস্তানি সেনারা নিহত ও আহত সঙ্গীদের ফেলে পালিয়ে গেছে।
এরপর আতাহার আলীসহ মুক্তিযোদ্ধারা ঢুকে পড়লেন পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা অবস্থানের ভেতর। তখন পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা অবস্থানের ভেতর পড়ে আছে কয়েকজন পাকিস্তানি সেনার লাশ। আহত কয়েকজন কাতরাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে তছনছ হয়ে গেছে পাকিস্তানিদের প্রতিরক্ষা।
পাদটীকা
পুরস্কার ও সম্মাননা
- বীর প্রতীক
তথ্যসূত্র
- ↑ দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ০৮-০৬-২০১২
- ↑ একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ১৫২। আইএসবিএন 9789849025375।