Sabita Roy Choudhury

Indian writer
The basics

Quick Facts

IntroIndian writer
PlacesIndia
wasWriter
Work fieldLiterature
Gender
Female
Birth1932
Death28 September 2014 (aged 82 years)
Family
Children:Subrata Roy Choudhury
The details

Biography

সবিতা রায়চৌধুরী (১৯৩২ – ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক। মূলত ছোটগল্পকার হিসাবেই তিনি সমধিক পরিচিত। বিংশ শতাব্দীর বাঙালি জীবন, দেশভাগ, দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের জীবনযন্ত্রণা, উদ্বাস্তু মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই, বেকারত্ব, সাধারণ মেয়েদের জীবনযাপন ও মনস্তত্ত্বের চিত্রই সবিতাদেবীর রচনার মূল উপজীব্য। ব্যক্তিজীবনে নিতান্তই এক আটপৌরে মা ও গৃহবধূ সবিতাদেবী ছিলেন পাশ্চাত্য সাহিত্য ও দর্শন সম্পর্কে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞা। বাংলা ছাড়া দ্বিতীয় কোনও ভাষায় তার জ্ঞান বিশেষত ছিল না। বঞ্চিত হয়েছিলেন প্রথাগত শিক্ষালাভেও। কিন্তু গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও পর্যবেক্ষণশক্তির মাধ্যমে জীবনের পড়ন্ত বেলায় ৬০ বছর বয়সে লেখালেখি শুরু করে তিনি অর্জন করেছেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম লেখিকার আসন। তাঁর বেলা অবেলা (উপন্যাস), রোদবৃষ্টি (গল্পগ্রন্থ), এখন প্রদোষকাল (গল্পগ্রন্থ) গ্রন্থগুলি বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রচনাগুলির মধ্যে অন্যতম। পেয়েছেন যোগেশচন্দ্র বাগল প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিকার পক্ষ থেকে আশাপূর্ণা দেবী স্মারক সম্মান

জন্ম ও পারিবারিক জীবন

জন্ম ১৯৩২ (৩১ কার্তিক ১৯৩৯ বঙ্গাব্দ) সালে বর্তমান বাংলাদেশের যশোহর জেলার শৃখোল গ্রামে। ছয় মাস বয়সেই বাবা নগেন্দ্রনাথ মিত্র মারা যান। মা কিরণশশী মিত্র অত্যন্ত কষ্টে দেওর কিরণ মিত্রের সহযোগিতায় যৌথ পরিবারের আবহাওয়ায় মানুষ করে তোলেন লেখিকাকে। বিবাহ হয় যশোহর জেলারই মাগুরার বীরেশ্বর রায়চৌধুরীর পুত্র শ্রী সত্যপ্রকাশ রায়চৌধুরীর সঙ্গে। লেখিকার বড়ো ছেলে সুব্রত রায়চৌধুরী বাংলা সাহিত্যের একজন বিখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক।

শিক্ষা ও জীবনসংগ্রাম

তখনকার দিনে ছেলেরা পড়াশুনা করতে পারলেও মেয়েদের সে উপায় ছিল না। তার উপর সবিতাদেবীর বাবা ছয় মাস। বয়সেই দেহ রেখেছিলেন বলে তিন ভাই-বোনকে নিয়ে মা কিরণশশী মিত্র ভাসুর ঠাকুরপোর সংসারে পরান্নভোজী হিসাবেই দিন কাটাতেন। জ্যাঠামশাই বা কাকা পিতৃহারা ভাইঝিকে ভালোবাসতেন বটে, তবে লেখাপড়ার সুযোগ করে দেন নি। একদিন সবিতাদেবী বাইরের ঘরে এক যুবককে আবিষ্কার করলেন। প্রতিদিন সকালে তিনি দাদাদের পড়াতেন। মাঝে মাঝে লুকিয়ে লুকিয়ে তিনি দেখতেন দাদাদের পড়াশুনা। বড্ড লোভ হত। ভাবতেন তাকেও যদি একটু বসতে দিত ওদের পাশে। কিন্তু মেয়েদের তো পড়তে নেই, ছোটবেলায় পুতুল খেলতে হয়। আর একটু বড় হলেই পুতুলের মতো সংসার পাততে হয়। কাজেই সব ইচ্ছেটুকুকে লাগাম দিয়ে রেখেছিলেন। তবু এরই ফাঁকে দাদাদের সাথে ভাব জমিয়ে শিখে ফেলেছিলেন অক্ষরমালা। আর এ ভাবেই একসময় হয়ে গেল তাঁর বর্ণপরিচয়।

প্রথাগত শিক্ষা না থাকলেও শ্বশুরবাড়ীতেই বিদ্যাচর্চার শুরু। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই বিয়ে হয়ে গেল মাগুরা শহরের এক বনেদি একান্নবর্তী পরিবারের বিরাট বাড়িতে। সে বাড়িতে বৈঠকখানার আলমারিতে সাজানো থাকতো বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র এমন আরও অনেকের বই। গ্রাম থেকে এসে এই নতুন সংসারে ঐ অক্ষরজ্ঞানটুকুর ভরসাতেই এই বইগুলোকে অবসর সময়ের সাথী করে নিয়েছিলেন সবিতাদেবী। স্বশিক্ষিত হয়েছেন স্বামীর উৎসাহে।

ইতিমধ্যে এল দুর্ভিক্ষ, দাঙ্গা, এল ডানাভাঙা স্বাধীনতা। চলে আসতে হল। এপার বাংলায়। আবার নতুন করে সংসার পাতার পালা। শুধু 'রাঁধার পরে খাওয়া আর খাওয়ার পরে রাঁধার' দিন ফুরলো। তাই সেলাই-ফোঁড়াই, বৈকালিক ভ্রমণ, সন্তানদের দেখাশোনা— এইসব নানা কাজে জড়িয়ে গেলেন তিনি। আর এসবেরই ফাঁকে ফাঁকে পড়ে ফেলেছিলেন তারাশঙ্কর, বিভূতিভূষণ, অনুরূপা দেবী বা অনুবাদ সাহিত্য।

সাহিত্যচর্চা

চার সন্তানের জননী সবিতা দেবী লেখালেখি শুরু প্রৌঢ় বয়সে জীবনের পড়ন্ত বেলায় প্রায় ৬০ বছর বয়সে। প্রথম গল্প 'মিতা' প্রকাশ পায় ১৯৯১ সালে পারিবারিক পত্রিকা ‘কালবেলা’য়। অনেকগুলি গল্প লিখে ফেললেন নানা পত্র-পত্রিকায়। প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘রোদবৃষ্টি' প্রকাশিত হয় ১৯৯৯-এ। এরপর একে একে প্রকাশ পেল 'দ্বিতীয় ছোঁয়া (গল্পগ্রন্থ, ২০০৫), 'বেলা অবেলা' (উপন্যাস, ২০০৯)। গল্পগ্রন্থ 'এখন প্রদোষকাল' (২০১৫)।

পুরস্কার ও সম্মাননা

  • বেলা অবেলা গ্রন্থের জন্য পেয়েছেন যোগেশচন্দ্র বাগল প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিকার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে আশাপূর্ণাদেবী স্মারক সম্মান
  • তথ্যসূত্র গবেষণাপত্র কথাসাহিত্যিক সবিতা রায়চৌধুরী ও তাঁর স্বামী সত্যপ্রকাশ রায়চৌধুরীর সম্মানে চালু করেছে সত্য-সবিতা মেধা বৃত্তি
  • তথ্যসূত্র গবেষণাপত্র প্রতি বছর সবিতাদেবী স্মারক সম্মান প্রদান করে তরুণ গবেষককে।

জীবনাবসান

এই জীবনব্যাপী লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪। তাঁর মৃত্যুতে 'আজকাল' সংবাদপত্রের প্রয়াণলেখায় গভীর শোক প্রকাশ করা হয়। এই নিরলস, প্রচারবিমুখ মানুষটির মধ্যে সাহিত্যরসিক একটি মন যেমন ছিল, তেমনি ছিল সুগভীর সামাজিক অনুসন্ধিৎসা। যে অনুসন্ধিৎসা গবেষণারও অন্যতম মূল কথা। তাঁর এই লড়াইকে শ্রদ্ধা জানাতেই তথ্যসূত্র গবেষণাপত্রের পক্ষ থেকে তরুণ গবেষকদের সবিতাদেবী নামাঙ্কিত প্রতি বছর সবিতাদেবী স্মারক সম্মান প্রদান করা হয়।

তথ্যসূত্র

  1. রায়চৌধুরী, সবিতা। "এখন সময়, শারদীয়া (আশ্বিন), গল্প : সুমনের স্বপ্ন ও টুকরো টুকরো কয়েকটি ছবি"www.srishtisandhan.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-৩০ 
  2. "শ্রীচরণেষু ১" 
  3. সুব্রত রায়চৌধুরী, সম্পাদিত। "সবিতাদেবী স্মারক সংখ্যা"। তথ্যসূত্র গবেষণাপত্র। বিশেষ সংখ্যা। 
  4. শাক্য সেন (২০২০)। গবেষণা গ্রন্থমালা ৩ : সবিতা রায়চৌধুরী। নবাবারকপুর, কলকাতা - ৭০০১৩১: তথ্যসূত্র। 
  5. "সুব্রত রায়চৌধুরী"উইকিপিডিয়া। ২০২২-০৭-২৩। 
  6. "Sabita Roychowdhury"www.facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৪ 
  7. "শ্রীচরণেষু ২" 
  8. বারিদবরণ ঘোষ। "আত্মকথায় ভগ্নদেশ"সংবাদ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৪ 
  9. "শ্রীচরণেষু ৩" 
  10. "তথ্যসূত্র"www.facebook.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-২৪ 
The contents of this page are sourced from Wikipedia article on 08 Mar 2024. The contents are available under the CC BY-SA 4.0 license.