Mizanur Rahman

Bangladeshi literature and writer
The basics

Quick Facts

IntroBangladeshi literature and writer
PlacesBangladesh
isWriter
Birth1931
Age94 years
The details

Biography

মীজানুর রহমান

মীজানুর রহমান (জ. ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১- মৃ. ২৬ জুন ২০০৬ ) বাংলাদেশের একজন সাহিত্যিক, সম্পাদক এবং লেখক। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত মীজানুর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকা শীর্ষক সাহিত্য পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসাবে খ্যাত

জন্ম ও শিক্ষা জীবন

মীজানুর রহমান জন্ম ৬ ফাল্গুন, ১৩৩৭ বঙ্গাব্দে, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে বিক্রমপুর পরগণার (অধুনা মুন্সীগঞ্জ জেলা) ইছামতী নদীর তীরে টোল বাসাইল গ্রামের পৈতৃক ভিটায়। তার বাবা খন্দকার ফজলুর রহমান (১৮৯৮-১৯৮৪) এবং মা কাজী খুরশিদা খাতুন (১৯০৯-১৯৯২)। মীজানুর রহমানরা ছিলেন তিন ভাই, ছয় বোন। মীজানুর রহমান ভাইদের মধ্যে মধ্যম। জন্মের পর পিতার কর্মস্থলে চলে যান মে মাসেই। সেখানেই সেন্ট পলস কলেজ সংলগ্ন চ্যাপেল গার্লস স্কুল-এ শিক্ষা জীবন শুরু। ১৯৪০ সালে মিত্র ইনস্টিটিউশনে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হোন। ১৯৪৬ সালে এই স্কুলে হাতে লেখা কিশোর পত্রিকা মুয়াজ্জিন সম্পাদনার মধ্য দিয়ে সম্পাদক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। একই সঙ্গে লিপিকর-চিত্রকর হিসেবেও ঐ পত্রিকাতেই আত্মপ্রকাশ। স্কুলের খাতায় লিখে প্রচ্ছদ বানিয়ে বইয়ের আকারে প্রকাশিত এ পত্রিকাটি প্রকাশিত হতো যার পাঠক ছিল মীজানুর রহমানের স্কুলের বন্ধুরা।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তার পিতা পাকিস্তানে চলে আসার অপশন দিলে তিনি পরিবারের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান (এখন বাংলাদেশ বাংলাদেশে চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে বিশেষ ব্যবস্থায় মিত্র স্কুল থেকে নবম শ্রেণীর পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্নপত্র আর্মানিটোলা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। আর্মানিটোলা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সে সময়কার প্রধান শিক্ষক শামসুদ্দীন আহমদের অধীনে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে তিনি আর্মানিটোলা স্কুলে দশম শ্রেণীতে ভর্তি হোন এবং ১৯৪৯ সালে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষায় এবং ১৯৫১ সালে আই,এ ( বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোন।

এর পর প্রথমে জগন্নাথ কলেজ (এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)-এ আর্টস বিভাগে ভর্তি হলেও পরে আঁকাআঁকিতে আগ্রহ থাকায় সিদ্ধান্ত বদল করে ঢাকা আর্ট কলেজ-এ (বর্তমানে ঢাকা বিশ্বাবদ্যালয়ের চারু ও কারুকলা ইনস্টিটিউট) ভর্তি হোন। এখানে শিক্ষাগুরু হিসাবে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন, শিল্পগুরু কামরুল হাসান, শিল্পী আনোয়ারুল হক, খাজা শফিক, সফিউদ্দিন আহমদ এবং সতীর্থ হিসাবে রশীদ চৌধুরী, কাইয়ুম চৌধুরী, বিজন চৌধুরী, মুর্তজা বশীর, আবদুর রাজ্জাক, ইমদাদ হোসেন, খালেদ চৌধুরী, আলতাফ মাহমুদ প্রমুখের সান্নিধ্য লাভ করেন। কিন্ত পরে দেখা যায় মীজানুর রহমান বর্ণান্ধ। ফলে ১৯৫০ সালে চারুকলার অধ্যয়ন ত্যাগ করে আবার জগন্নাথ কলেজে ফেরৎ যান। সেখান থেকে ১৯৫৯ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

সম্পাদনা ও কর্ম জীবন

১৯৪৬ সালে মিত্র ইনন্সিটিউশনে ছাত্রাবস্তায় হাতে লেখা পত্রিকা মুয়াজ্জিন সম্পাদনার মাধ্যমে মীজানুর রহমানের সম্পাদনা জীবন শুরু। সে পত্রিকার ছবির কাজটিও তার হাত দিয়ে হতো। ১৯৪৬ - ১৯৪৭ সালে কলকাতার ইত্তেহাদ, আজাদ ও মর্নিং নিউজ পত্রিকায় তার আঁকা কার্টুন প্রকাশিত হয়।

দেশে আসার পর ১৯৪৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, তৎকালীন স্বাস্থ্য মন্ত্রী হবীবুল্লাহ বাহার, শিক্ষাবিদ ও নারী শিক্ষার অগ্রদূত শামসুন্নাহার মাহমুদ প্রমুখের বাণী সমৃদ্ধ হয়ে হাতে লেখা পত্রিকা মুয়াজ্জিন পরিবর্তিত রূপে পাকিস্তানের প্রথম কিশোর মাসিক পত্রিকা ঝংকার হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। পত্রিকার লেখক তালিকায় ছিলেন পল্লীকবি জসীমউদ্দীন, আহসান হাবীব, রোকনুজ্জামান খান (দাদাভাই), আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, মোহাম্মদ নাসির আলী, মবিনউদ্দিন আহমদ, আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দিন, ফয়েজ আহমদ, বদরুল হাসান (ছড়াকার), আশরাফ সিদ্দিকী, রওশন উজদানী ও হাবীবুর রহমান। অন্যতম গ্রাহক তালিকায় ছিলেন পরবর্তী কালে বিখ্যাত মুজাফ্ফর আহমদ (বর্তমানে খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক) এবং আহসানুল হক (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও এক সময়ের বিভাগীয় প্রধান, বর্তমানে অবসর প্রাপ্ত)। এই অভিযানে তার সঙ্গী ছিলেন অগ্রজ (বিখ্যাত গল্পগ্রন্থ ময়ূরের পা- এর লেখক) মঈদ-উর-রহমান। ঢাকায় ব্লক নির্মাতা না পাওয়ায় মীজানুর রহমান নিজহাতে কাঠ খোদাই করে ঝংকার-এর জন্য ব্লক নির্মাণ করেন। তবে ১৯৫১ সালেই ঝংকার পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।

১৯৫১ সালে মীজানুর রহমান রম্য, সাহিত্য ও বিনোদনমূলক মাসিক পত্রিকা রূপছায়ার সম্পাদনা ও প্রকাশনা শুরু করেন। এটি বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের) প্রথম সিনেমা পত্রিকা। পত্রিকার সম্পাদনার সঙ্গে তার অগ্রজ মঈদ-উর-রহমান কিছুকাল যুক্ত ছিলেন। বিশেষ সংখ্যা হিসাবে পত্রিকাটির প্রেম সংখ্যা, ভৌতিক সংখ্যা, বিজয় দিবস সংখ্যা সে সময় অনেকের প্রশংসাধন্য হয়েছিল।১৯৫২ সালে মাসিক রূপছায়ার প্রেম সংখ্যায় সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস এক মহিলার ছবি প্রথম প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকার বিজয় দিবস সংখ্যায় চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। ১৯৬১ সালে মাসিক রূপছায়া পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।

অত:পর পুলিশের পত্রিকা পলওয়েল প্রকাশিত মাসিক পত্রিকা ডিটেকটিভ-এর সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে ডিটেকটিভ পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি গ্রহণ করেন। এরপর কিছুদিন সাপ্তাহিক রমনা ও সাপ্তহিক চিত্রালী পত্রিকায় সম্পাদকীয় বিভাগে চাকরি করেন। পরে রেডিও পাকিস্তান চট্টগ্রাম শাখার বার্তা বিভাগে সহকারী সম্পাদক পদে যোগদান করে চট্টগ্রাম চলে যান।

বিবাহ ও সংসার জীবন

১৯৬৩ সালের ১৮ জানুয়ারি লুৎফা খানমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন। কিন্তু ১৯৬৩ সালের২৭ নভেম্বর যমজ পুত্র সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে স্ত্রীর অকাল প্রয়াণ ঘটে। এর ১১ দিন পরে দ্বিতীয় পুত্রের মৃত্যু হয়। পরে ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৬৮ মীজানুর রহমান নূরজাহান বেগম বকশীকে বিবাহ করেন।

সাহিত্য কর্ম

প্রকাশিত বই

  • রক্তপিছল কাশ্মির (একটি রাজনৈতিক সমীক্ষা), দিদার পাবলিশিং হাউজ, ঢাকা। ১৯৬৬
  • কাকাতুয়া, মলিয়ের রচিত ল্যে প্রেসিওজ রিডিকিউল নাটকের অনুবাদ, সাহানা, ঢাকা; প্রচ্ছদ: কামরুল হাসান। ১৯৮৪
  • কমলালয়া কলকাতা, (স্মৃতিকথা), সাহানা, ঢাকা; প্রচ্ছদ: সৈয়দ ইকবাল; অলঙ্করণ: মীজানুর রহমান। ১৯৯১
  • ঢাকা পুরাণ, (স্মৃতিকথা), প্রথমা, ঢাকা; প্রচ্ছদ ও অলংকরণঃ রফিকুন নবী। প্রথম প্রকাশঃ জানুয়ারী ২০১১

তথ্যসূত্র

The contents of this page are sourced from Wikipedia article on 29 Mar 2024. The contents are available under the CC BY-SA 4.0 license.