Meera Banerjee

The basics

Quick Facts

The details

Biography

বিদুষী মীরা বন্দ্যোপাধ্যায় (২৮ মার্চ ১৯৩০ - ২৭ জুন ২০১২) ছিলেন প্রখ্যাত কণ্ঠসঙ্গীত শিল্পী।

জন্ম ও সঙ্গীত জীবন

মীরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৮ মার্চ ব্রিটিশ ভারতের আগ্রা ও অবধের যুক্তপ্রদেশ অধুনা উত্তর প্রদেশের মিরাটে মাতুলালয়ে। পিতা শৈলেন্দ্রকুমার চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় ও দবীর খানের ছাত্র। মিরাটে জন্ম হওয়ায় তার নাম রাখা হয় 'মীরা'। তিনি বারো বছর বয়স পর্যন্ত পিতার কাছেই সঙ্গীত শিক্ষা নেন কলকাতায় ৮ দেবেন সেন রোডের নিজেদের বাড়িতে। স্বাভাবিক কারণেই সেসময় ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়, তারাপদ চক্রবর্তী, যামিনী গঙ্গোপাধ্যায়, বেগম আখতার, আলী আকবর খান, বিলায়েত খান, আমির খান, মালবিকা কাননের বাবা রবীন্দ্রলাল রায়, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের পিতা মহিম মুখোপাধ্যায়, সেতার বাদক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতা জিতেন বন্দ্যোপাধ্যায়, কাশীনাথ মুখোপাধ্যায় এবংউত্তমকুমার সহ সঙ্গীতের মহারথীদের সমাগম ছিল সেই বাড়িতে। সাঙ্গীতিক পরিবেশের এমন বাড়িতে বেড়ে ওঠেন মীরা। ধ্রুপদ, ধামার শেখেন চিন্ময় লাহিড়ীর কাছে।অল্প বয়সেই তিনি 'অল অল বেঙ্গল মিউজিক কম্পিটিশন’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ধ্রুপদ, খেয়াল, ভজন, টপ্পা প্রতিটি বিষয়েই প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি কিশোরী বয়সে নৃপেন মজুমদারের আহ্বানে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে সংগীত পরিবেশন করতে শুরু করেন। সেসময়েই প্রথম প্রকাশিত হয় তার গানের রেকর্ড, যার একপিঠে ছিল কেদাররাগে নিবন্ধ রচনা এবং অন্য পিঠে ছিল ঠুংরী। ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে সঙ্গীতাচার্য গিরিজাশঙ্কর চক্রবর্তী মীরাকে 'গীতশ্রী' উপাধিতে ভূষিত করেন। সংগীতের আরো উচ্চ ভাবনার সঙ্গে পরিচিত করাতে তার পিতা নিয়ে যান পটিয়ালা ঘরানার কিংবদন্তি শিল্পী উস্তাদ উস্তাদ বড়ে গুলাম আলী খানের কাছে। মীরাকে গান শেখাতেন বলে জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ তাদের ডিকসন লেনের বাড়ির দু-টি ঘর ছেড়ে দিয়েছিলেন উস্তাদের থাকার জন্য। উস্তাদজী খুবই স্নেহ করতেন মীরাকে। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় প্রথম ডোভার লেন সংগীত সম্মেলন শুরু হলে মীরা সেখানে অংশগ্রহণ করেন এবং সেই একই আসরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বড়ে গুলাম আলী খানও। পরে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে পাটনায় মিউজিক কনফারেন্সে যোগদিতে গেলে তার সঙ্গে আলাপ হয় আর এক উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের শিল্পী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। আলাপ ঘনিষ্ঠ হলে ওই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি তাদের বিবাহ হয়।। বিবাহের পর এক সঙ্গে দু-জনের বেশ কিছু রেকর্ড প্রকাশিত হয়।

মহিলা শিল্পীর ভূমিকা নিয়ে যখন সমাজ পুরোপুরি সংস্কারমুক্ত নয়, তখন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর অনুরোধে রাশিয়া, পোল্যান্ড, চেকোস্লোভাকিয়া সফরে মীরা দেবী রবিশঙ্কর, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, কিসের মহারাজের সঙ্গী হয়ছিলেন। দীর্ঘ শিল্পীজীবনে তিনি ভারত তথা বাংলার সাঙ্গীতিক দূত ছিলেন।

তপন সিংহের অনুরোধে মীরা প্রথম ‘অতিথি’ ছবিতে কণ্ঠ দেন। এরপর তিনি ‘বৃন্দাবনলীলা’, ‘মেঘমল্লার’ ছবিতেও নেপথ্য সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন।

সঙ্গীতজীবনে বিদুষী সঙ্গীতশিল্পী বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে আকাশবাণীর সঙ্গীতের জাতীয় কার্যক্রমে সঙ্গীত পরিবেশন করে সারা দেশের সঙ্গীতপিপাসুর হৃদয় জয় করেছেন। রাষ্ট্রপতি ভবনের বিশেষ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করেন। অন্যান্য পুরস্কার গুলি হল-

  • আলাউদ্দিন পুরস্কার
  • গিরিজাশঙ্কর পুরস্কার
  • সৌরভ পুরস্কার
  • ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে - আইটিসি এসআরএ পুরস্কার
  • ভুয়ালকা পুরস্কার
  • পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমি পুরস্কার

জীবনাবসান

বিদুষী মীরা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার বোসপুকুরের বাড়িতে প্রয়াত হন। পণ্ডিত প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিদূষী মীরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেবযানী মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রাণী মজুমদার সহ তিন কন্যা। প্রখ্যাত সরোদশিল্পী পণ্ডিত পার্থ সারথি তাদের এক জামাতা।

স্মৃতিচারণা

তথ্যসূত্র

The contents of this page are sourced from Wikipedia article on 13 Mar 2024. The contents are available under the CC BY-SA 4.0 license.