Aftab Ali

(born 1925)
The basics

Quick Facts

Intro(born 1925)
PlacesBangladesh
Gender
Male
Birth1925
Age100 years
The details

Biography

ক্যাপ্টেন (অব.) আফতাব আলী (জন্ম: ১ ডিসেম্বর, ১৯২৫ - মৃত্যু: ৩১ জানুয়ারি ২০১৭) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক ও বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে। তার গেজেট নম্বর ৩৬।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

আফতাব আলীর জন্ম সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বর দক্ষিণভাগ গ্রামে। তার বাবার নাম ইদ্রিস আলী ও মায়ের নাম জোবেদা খানম। তার স্ত্রীর নাম তাহেরা খানম। তার দুই ছেলে, পাঁচ মেয়ে।

কর্মজীবন

আফতাব আলী সৈয়দপুর সেনানিবাসে ১৯৭১ সালে সুবেদার পদে কর্মরত ছিলেন। মার্চ মাসে তার কোম্পানি ছিল পলাশবাড়ীতে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধ যুদ্ধ শেষে অবস্থান নেন রৌমারীতে। এপ্রিল মাসের ১৪ বা ১৫ তারিখে তিনি রৌমারী থানা দখল করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের কাছে আফতাব আলী ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। অসংখ্য পাকিস্তান সমর্থককে প্রকাশ্যে গুলি করে শাস্তি দেন। জীবনের তোয়াক্কা না করে একের পর এক পাকিস্তানিদের বিপর্যস্ত করে দেন। তিন একবার আহত হন। তার দুই পায়ে চারটি গুলি লাগে। সুস্থ হয়ে পুনরায় যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দুঃসাহসী এই যোদ্ধা কখনো থেমে যাননি। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় অদম্য সাহস ও বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। রৌমারী মুক্ত রেখে তিনি কিংবদন্তির যোদ্ধা হিসেবে পরিচিতি পান।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালে অক্টোবর মাসে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার কোদাকাঠিতে মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল মুখোমুখি যুদ্ধ হয়। মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন আফতাব আলী। মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে তার নেতৃত্বে বিপুল বিক্রমে যুদ্ধ করতে থাকলেন। বিকেল, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলো। পরদিনও যুদ্ধ চলল। তৃতীয় দিন দুপুরের পরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দিক থেকে গোলাগুলি কমতে থাকল। রাতে একেবারে গোলাগুলি বন্ধ হয়ে গেল। সে সময় তারারশিপাড়া, খারুভাজ, চরসাজাই, ভেলামাঝী, শঙ্কর- মাধবপুর এবং দেউয়ারচর নিয়ে ছিল কোদালকাঠি ইউনিয়ন। ইউনিয়নের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ছিল ব্রহ্মপুত্র নদ। এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ডেলটা কোম্পানির একাংশ বিদ্রোহ করে সুবেদার আফতাব আলীর নেতৃত্বে বর্তমান গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থেকে রৌমারীর চরাঞ্চলে অবস্থান নেয়। সেখানে আফতাব আলী তার দলে স্থানীয় ছাত্র-যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি আগস্ট মাসের প্রথমার্ধ পর্যন্ত গোটা রৌমারী এলাকা মুক্ত রাখতে সক্ষম হন। ৪ আগস্ট পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরাট একটি দল রৌমারী দখলের উদ্দেশ্যে কোদালকাঠিতে আক্রমণ করে। ব্যাপক আর্টিলারি গোলাবর্ষণে মুক্তিযোদ্ধারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এই সুযোগে পাকিস্তানিরা কোদালকাঠি দখল করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী শক্তিতে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকগুণ। সে জন্য আফতাব আলী তখনই পাকিস্তানি সেনাদের পাল্টা আক্রমণ না করে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধির জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কয়েক দিনের মধ্যেই মুক্তিবাহিনীর আরও কয়েকটি দল এসে শক্তি বৃদ্ধি করে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী কোদালকাঠিতে অবস্থান নিয়ে রৌমারী দখলের চেষ্টা করতে থাকে। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সে প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে থাকেন। দুই-তিন দিন পরপর সেখানে অনেক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এসব যুদ্ধে তিনি যথেষ্ট সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শন করেন। তার সাহসিকতায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রৌমারী দখলের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। দুই দিন তুমুল যুদ্ধের পর পাকিস্তানি সেনারা কোদালকাঠি অবস্থান ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর গোটা রৌমারী এলাকা পুরোপুরি মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়।

মৃত্যু

৩১ জানুয়ারি ২০১৭ সালে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নি‌য়ে যাওয়ার প‌থে মাধবপুর এলাকায় তি‌নি মারা যান। মৃত্যুকা‌লে তার বয়স হ‌য়ে‌ছিল ৯৫ বছর। তি‌নি স্ত্রী, ২ পুত্র, ৫ কন্যা ও না‌তি নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রে‌খে গে‌ছেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা

  • বীর প্রতীক
  • বীর উত্তম

পাদটীকা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ০৩-০৪-২০১২
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৬৮। আইএসবিএন 9789843351449। 
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ৩১। আইএসবিএন 9789849025375। 
  4. "মুক্তিযোদ্ধা আফতাব স্মরণে কানাডায় শোকসভা"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০৫ 
  5. "ক্যা‌প্টেন আফতাব আলী বীর উত্তম বীর প্রতীক আর নেই, বুধবার জানাযা, বি‌ভিন্ন মহ‌লের শোক"আমাদের প্রতিদিন। ৩১ জানুয়ারি ২০১৭। ৫ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৯ 

বহি:সংযোগ

The contents of this page are sourced from Wikipedia article on 25 Mar 2020. The contents are available under the CC BY-SA 4.0 license.